সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশে বিস্তৃত। প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত এই বনভূমির দুই-তৃতীয়াংশ বাংলাদেশের মধ্যে পড়েছে। সুন্দরবন গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা নদীর অববাহিকার সংযোগস্থলে অবস্থিত, যা এর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছে।
সুন্দরবনের নামকরণ হয়েছে ‘সুন্দরী’ নামক এক ধরনের ম্যানগ্রোভ গাছের নাম থেকে। এই বন তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্যময় জীববৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত। সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল, যা এই বনের প্রধান আকর্ষণ। এ ছাড়া এখানে চিত্রা হরিণ, কুমির, বন্য শূকর, বানরসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে। বিভিন্ন ধরনের পাখি, কীটপতঙ্গ, সরীসৃপ এবং জলজ প্রাণীও এ বনের অংশ। সুন্দরবনের নদী ও খালগুলোতে ডলফিনসহ বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী দেখা যায়।
এ বনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জন্য একটি প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষামূলক বেষ্টনী হিসেবে কাজ করে। এটি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় এলাকাকে রক্ষা করে এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। https://www.profitablecpmrate.com/mn0cn713dw?key=25628154b0024703397e99ee97083414
সুন্দরবন শুধু প্রাকৃতিক সম্পদের ভাণ্ডার নয়, এটি স্থানীয় জনগণের জীবিকার উৎস। এখানে মধু সংগ্রহ, মাছ ধরা, কাঠ এবং গোলপাতা সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করা হয়। তবে অত্যধিক আহরণ, দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুসংস্থান হুমকির মুখে পড়েছে।
সুন্দরবন শুধু বাংলাদেশের গর্ব নয়, এটি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ঐতিহ্য। এর সুরক্ষা ও সংরক্ষণে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া অপরিহার্য, যাতে এ বনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অটুট থাকে।
0 Comments